ধরিত্রীনির্ভর যাপনঃ সহজ জীবনের পাঠ ও শান্ত বিপ্লব (Earth-Centric Living: The Lessons of Simple Life and the Quiet Revolution)

Posted on 1st December, 2025 (07:15 hrs)

পথিক বসু⤡⤡

ABSTRACT

Pathik Basu advocates for an “Earth-Centric/Earth-Reliant Living” philosophy as a crucial response to both contemporary ecological and social crises, emphasizing a shift away from money-centric existence towards interdependence with nature and community. Based on his practical experience farming in small, decentralized units (even as small as 250 sq ft), Basu proposes a living framework where families can achieve self-sufficiency in food, nutrition, and health—producing daily vegetables, fruit, fish, and eggs organically—by treating “one’s waste as another’s nutrition.” This practical application is paired with a social call to action he terms “Tree, Bird, Fifteen,” urging individuals to nurture the environment in their immediate surroundings and strengthen bonds of trust and support with their 10-15 closest kins, thereby cultivating a network of love and mutual aid that forms the foundation of a prosperous, non-violent, and aesthetically grounded society.

The following text has two portions: first, the Bangla original, followed by the English translation of the same. This article is presented by Ecotopians of Alternity⤡.

ভূমিকার বদলেঃ

নিচের লেখাটি লিখেছেন পথিক বসু⤡⤡। তিনি এককালে তাঁর নিজের পিএইচডির কাজ ছেড়ে-ছুড়ে বেশ কিছু বছর এক নামী ব্যাঙ্কে চাকরী করেছেন। তারপর অকাল অবসর নিয়ে নেন। অনেকদিন ধরে তিনি চালিয়েছেন “শ্রয়ণ” (প্রতিষ্ঠাকালঃ ১৯৯৬) নামের এক পত্রিকা। এই পত্রিকার নানান সংখ্যাগুলো গাঁধি থেকে রবীন্দ্রনাথ হয়ে মার্ক্স — সর্বক্ষেত্রেই অবাধ বিচরণ করেছে। কথা বলেছে শিশুবেলার শিক্ষাদীক্ষা, কৈশোরের মনন, কিংবা বৈষম্য, বিশ্বায়ন এবং ভেন্ন ধরণ-ধারণের যাপন, ভিন্ন প্রায়োগিক দর্শন প্রসঙ্গে। আজকাল পথিকবাবু পশ্চিমবঙ্গের ঘুটিয়ারি শরিফ এলাকায় কৌম-নির্ভর খামারবাড়ির বিকেন্দ্রিক চাষ-বাস করে এক শান্ত বিপ্লবের সূত্র ধরিয়ে দিচ্ছেন। আজকের ব্যাপক নিসর্গ-সংকটকালে এ এক অসামান্য উদ্যোগ। এরকম আরো মাটির পানে ফিরে চলার উদ্যোগ ঘটে চলেছে বিশ্বপৃথিবী জুড়ে।

কেমনতর এই শান্ত বিপ্লব? এর শুরু অনেকটা “ব্যক্তিগত” সত্যাগ্রহের জায়গা থেকে — যদিচ সে “ব্যক্তিগত” ক্রমশ-ক্রমাগত সমিতির সম্মেলনে “নৈর্ব্যক্তিক” হয়ে বহুত্বে প্রকাশ পায়। সেই বিপ্লবে অন্যকে “শত্রু” হিসেবে দাগিয়ে দিয়ে অহেতুক মারপিট করা নেই, হিংসা-ঘেন্না-রাগ-বিদ্বেষ নেই — বরং আছে একরাশ ভালোবাসার প্রতিরোধ। এখানেই চলে আসে শিল্পিত নান্দনিক যাপনের কথা। হ্যাঁ, “ভ্যানগার্ড” বনে গিয়ে মুখেন মারিতং জগৎ-এর ক্রিয়াকর্মে না মেতে নিজেই “বদল” হয়ে ওঠা। হ্যাঁ, “হয়ে ওঠা”। “যেমন হয়ে থাকে”-র স্তরকে পেরিয়ে– একাধিক উদ্বৃত্ত সৃষ্টিশীলতায়, সংলাপে। সেখানে জ্ঞানমিশ্রিত কর্মযোগ মিলে-মিশে যায় প্রেমযোগেও। প্রাতিষ্ঠানিকতার আড়ম্বর থেকে বেরিয়ে এসে, ডিগ্রী-নোকরির সমীকরণকে বেমালুম ভুলিয়ে দিয়ে এইখানেই আসে সহজ জীবনের পাঠের প্রসঙ্গ।

জীবনানন্দকে স্মরণ করে বলিঃ

“সহজ লোকের মতো কে চলিতে পারে।
কে থামিতে পারে এই আলোয় আঁধারে
সহজ লোকের মতো; তাদের মতন ভাষা কথা
কে বলিতে পারে আর (…)

সকল লোকের মতো বীজ বুনে আর
স্বাদ কই, ফসলের আকাঙ্ক্ষায় থেকে,
শরীরে মাটির গন্ধ মেখে,
শরীরে জলের গন্ধ মেখে,
উৎসাহে আলোর দিকে চেয়ে
চাষার মতন প্রাণ পেয়ে
কে আর রহিবে জেগে পৃথিবীর ’পরে?”

পথিক বসু এখন নিজের পরিচয় দেন অনেকটা এইভাবেঃ

“From laborer to farmer, I’ve come a long way. Now, I till the land with love, nurturing the soil and cultivating hope. I envision a world where wealth loses its grip, and our bond with the earth and each other deepens. A world where love, compassion, and interdependence weave the fabric of our communities, and the beauty of life is cherished above material wealth.”

এর মোটামুটি ভাবানুবাদ এরকমঃ

“শ্রমিক থেকে কৃষক — দীর্ঘ পথ পেরিয়ে আজ এই চৌকাঠে এসে দাঁড়িয়েছি। এখন আমি মাটিকে ভালোবেসে চাষ করি, সেই মাটিকেই আদর করি। এসবের মধ্যে দিয়েই আশার আঁতুড়ঘর বানিয়ে চলি। আমি এমন এক বিশ্বের স্বপ্ন দেখি যেখানে সম্পদ লুটপাট করা কমে যাবে, আর মানুষের সঙ্গে ধরিত্রীর বন্ধন আরও গভীর হয়ে উঠবে। এ হবে এমন এক পৃথিবী, যেখানে ভালোবাসা, সহমর্মিতা ও পারস্পরিক নির্ভরতাই আমাদের প্রতিদিনের মূলমন্ত্র হয়ে উঠবে। সেক্ষেত্রে প্রতিটি জীবনরূপের নিজস্ব নান্দনিকতা যেকোনোরকমের সম্পদ-অপচয়ী যাপনের চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান হয়ে দাঁড়াবে।”

এবার তবে সংক্ষেপে পড়েই ফেলা যাক তাঁর কথা-বার্তা!

১। তত্ত্বদরশন

গ্রামে গিয়ে কাজ এবং ঘরে থেকে কাজ — এই দুয়েতেই আমি সামান্য কিছু কাজ করতে পেরেছি। যৎসামান্য সেই অভিজ্ঞতা দিয়ে বলছি, আমি-আপনি যদি ধরিত্রী এবং মানবিক সমাজের জন্য কিছু করব মনে করি (ত্যাগস্বীকার অথবা ঋণ শোধ) সেটা ঘরে বসেই করা যায়। চাইছি একটা শুভ সমাজ। সেখানে ধরিত্রী অবারিত থাকবে, মানুষ মানুষের হাত ধরে থাকবে (এই দুটো ঘটলেই অর্থের প্রয়োজন অনেক কমে যায়), তাই যতটুকু অর্থের দরকার সেটার সামাজিক চলন — এসব ঘরে বসেই শুরু করা যায়।

মানুষ শুধু যে টাকায় দরিদ্র তা নয়, মানুষ তিনে রিক্ত। টাকা, ধরিত্রী ও সঙ্গ। যদি সে শেষের দুটোতে, সম্পৃক্ত না হোক, সংযুক্ত থাকার চেষ্টা করত তাহলে টাকা-গরিবী তার কমত। এই শিক্ষা এই কর্ম আজ সবচেয়ে বড় প্রয়োজন একেই একই চালু ভাষায় বলতে চাইছি — “গাছ পাখি পনেরো, শ্রদ্ধা করো সঙ্গ করো”।

গাছ পাখি মানে ধরিত্রী। জল মাটি হাওয়া আলো আকাশের সেবা। তাদের প্রাণবন্ত রাখা। জল যাতে দোষমুক্ত হয়, মাটি যাতে নির্মল থাকে, হাওয়া যাতে নির্বিষ বইতে পারে, আলো যাতে নিষ্কলুষ হয় আর আকাশের প্রতি শ্রদ্ধা। এবং এদের ওপর নির্ভর করছে যতো সব প্রাণের যাওয়া-আসা, আণুবীক্ষণিক থেকে বিরাট, তাদের সাধ্যমত সেবা। তাই সহজ কথা সহজ আচার — গাছ ও পাখি। আমার চৌহদ্দিতে এই দুটি ভরপুর থাকলেই হবে। নাহয় গাছ দিয়ে শুরু করুন। এক চামচ মাটিতে এক বিলিয়ন মাইক্রোব থাকে। এবার ভেবে দেখুন একটা গাছকে কেন্দ্র করে প্রাণের কি বিচিত্র খেলা চলবে। চোখের সামনে দেখতে পাব পাখি প্রজাপতি মৌমাছিদের যাওয়া আসা। খুব ছোট জায়গায় আমরা এই কাজ করে ফেলতে পারি। গাছ দিয়ে রোদ ধরুন। জল ধরুন। কেঁচো আর আগাছায় ভরাট করে দিন মাটি। হাওয়া শুদ্ধ করুন। আমার আপনার ঘরে ভুবনের যতোটা আসা-যাওয়া ততটা শুদ্ধ হতে থাক। করা যায়। ধারিত্রিক প্রাণের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করা যায়।

এবার আসি পনেরোর কথায়। বলি বটে — আয় তবে বেঁধে বেঁধে থাকি — কিন্তু চশমা যে আলাদা আলাদা! হাত সরিয়ে রাখবার শিক্ষাটিই তো শৈশব থেকে চর্চা করে এসেছি এবং আজও সন্তানসন্ততিদের তাই শেখাচ্ছি। স্কুলশিক্ষা? নির্দয়ের রকমের অসামাজিকতার শিক্ষা। আমাকে ফার্স্ট হতেই হবে অথবা কেন যে আমি পারছি না! ওহ্ ভয়ঙ্কর! তাই পনেরোর প্রবর্তনা। একটু অন্যভাবে। আপনার আমার প্রত্যেকের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কমবেশি দশ-পনেরোটি পরিবার। আপনার প্লাম্বার, আপনার ইলেকট্রিশিয়ান, আপনি যাদের থেকে সবজি মাছ মাংস ডিম কেনেন — এদের সঙ্গে আপনার একটা ভালোবাসার একটা বিশ্বাসের সম্বন্ধ আছে। এদের সঙ্গে আপনি অনুরূপ সবুজের মেলা বসাতে পারেন এবং যা আপনার বাড়তি (যত কমই তা হোক না কেন) তেমন অর্থ ও শ্রম-সময় আপনি শেয়ার করতে পারেন। হাতে হাত মিললে কত যে কাজ করা যায়! করা যাচ্ছে। মাসে একটা দুটো তিনটে চারটে ছুটির দিন এইসব মানুষগুলির সঙ্গে, তাদের পরিবারের সঙ্গে, তাদের এলাকায় চুটিয়ে ছুটি কাটান। দেখবেন কি বিপুল আনন্দ সকলের মধ্যে সঞ্চারিত হয়েছে এবং শান্তিনিকেতন। একটার জায়গায় পনেরোটা শান্তিনিকেতন গড়ে উঠেছে! হয়েছে। হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ এই চাইতেন (অম্লান দত্তের সঙ্গে কথা বলে আমি রবীন্দ্রভাবনাকে এইরকমই বুঝেছিলাম)।

এই নিয়ে আলাপ চলতে পারে অবশ্যই, তবে শুধু কথা নয়, একটা গাছ লাগানো দিয়েই আমরা যার যার বাড়ি আলোকিত করতে থাকি, ঘরেতে মৌমাছি এলে বাকিটা আপনা আপনি হবে!

২। প্রয়োগ প্রসঙ্গে

যে কোনো মানুষের ভালো থাকা না থাকা সংক্রান্ত সমস্যার পরিষ্কার উত্তর আছে। একেবারে পরিষ্কার উত্তর আছে। টাকা নির্ভর জীবনযাপন থেকে আমাদের সরে আসতে হবে ধরিত্রীনির্ভর জীবন যাপনে। এবং হাতে হাত ধরার মানসিকতায়। আমি এর ওপর কাজ করেছি। অতি অল্প জায়গায় কিভাবে আমরা (প্রথম প্রথম) কম টাকায়, (তারপর) বিনা পয়সায় আশ্রয় ও খাদ্য তথা পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের সুব্যবস্থা করতে পারি তার পথ ও পদ্ধতি আজ আমার অজানা নয়। আগে নিজেকে খাবার, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি নিজের হাতে তৈরি করে নিই – এই সৃষ্টিই একটা বড় মানের বৈপ্লবিক পদক্ষেপ। এই নিয়ে আমারই সম্পাদনায় একটি বই বার হয়েছিল ২০০৭ সালে – ‘ব্যক্তিত্ব, সমিতি ও শান্ত বিপ্লব’ নামে।

তত্ত্বের কথা থাক, বাস্তবে এখনই যা করা যায় অথবা কি করে হয়েছে সেটা সংক্ষেপে বলে নেয়া যাক। এরপর প্রয়োজন মনে করলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। যোগাযোগ করবেন তিনিই যিনি কাজ করতে চাইছেন। আপনার ঘর, বারান্দা, ব্যালকনি, ছাদ এবং আপনার সদিচ্ছা এই দুটিই মাত্র কাম্য।

আমরা অল্প জায়গায় মিশ্র চাষের একটা পরীক্ষা করেছি, যেখানে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে, প্রায় নিখরচায়, একের বর্জ্য অন্যের পুষ্টি, এমন দক্ষতায় সার্বিক চাষ সম্ভব হয়েছে। আমাদের এই পরীক্ষার (এবং তা এখন স্ট্যান্ডার্ড, আর স্ট্যান্ডার্ড হয়েছে বলেই বৃহত্তর সমাজের কাছে কমিউনিকেট করছি) স্ট্যান্ডার্ড ইউনিট হল আড়াইশো স্কোয়ার ফুটের এলাকা। এর মধ্যে দেড়শ স্কোয়ার ফুটে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো থাকতে হবে, থাকতেই হবে। বাকি ১০০ স্কোয়ার ফুট আলোছায়া হলে চলবে।

আমরা এই আড়াইশো স্কোয়ার ফুটের মধ্যে ১০০ স্কোয়ার ফুট রেখেছি মিশ্র সবজি চাষে। যে ঋতুতে যে যে সবজি চাষ স্বাভাবিকভাবে হয়ে থাকে, অন্তত ৮-১০ রকমের বিভিন্ন সবজি নিয়ে মিশ্র সবজি চাষ করেছি ওই ১০০ স্কোয়ার ফুট এলাকায়। এই জায়গাতে পুরোপুরি রোদ দরকার।

বাকি ১০০ স্কোয়ার ফুটে আমরা একটা ট্যাংক কেটেছি। ট্যাংকটির গভীরতা ছয় ফুট। ট‍্যাঙ্ক কেটেছি পরীক্ষাটা ভালো করে বোঝার জন্য। দরিদ্র মানুষ মাটি কেটে ডোবা করে নিলেও কাজ হবে। এই ট্যাংকে আমরা মাছ চাষ করেছি। দেশি মাছ তারা। এদের মধ্যে প্রধানত আছে শিঙ্গি মাগুর ল‍্যাটা কই।

রইল বাকি ৫০ স্কোয়ার ফুট। এখানে একটা পেঁপে ও একটা কলাগাছ সাবলীলভাবে বাড়তে পারে। একটা পেঁপের জন্য ২৫ স্কোয়ার ফুট, একটা কলা গাছের জন্য ২৫ স্কোয়ার ফুট – দুটো মিলিয়ে ৫০ ফুট স্কোয়ার ফুট। এই দুটি গাছের মধ্যে যে স্পেস রয়েছে সেখানে রাখা যাচ্ছে ৪০ স্কোয়ার ফুটের একটি খাঁচা। খাঁচাটি দুতলার, একতলায় থাকতে পারে কম করে ছটি হাঁস, অন্যতলায় থাকতে পারে ছ’টি মুরগি।

এবার আমাদের প্রাপ্তিটা দেখা যাক। ১০০ স্কোয়ার ফুট এলাকার সবজি চাষে আমরা প্রতিদিন গড় এক কিলো সবজি পেতে পারি। কথাটা খেয়াল করুন, প্রতিদিন এক কিলো সবজি। ১০০ স্কোয়ার ফুট ট্যাংকে মাছ চাষ করে পেতে পারি মাছ (মাছের অডিট আমরা এখনো করে সঠিকভাবে করে উঠতে পারিনি তাই এই তথ্যটা দিতে পারছি না)। পেঁপে পাব সপ্তাহে ২ থেকে ৩টি, কলা দিনপিছু একটা তো বটেই। ডিম পাই দিনে চারটে, মাংস অপশনাল।

তাহলে একটি পরিবার, ধরে নিচ্ছি তার সদস্য সংখ্যা চার কি পাঁচ, আড়াইশো স্কোয়ার ফুটে যা পাওয়া যায় তাতে তাদের অনাহারে থাকতে হয় না। এইসব সবজি মাছ মাংস ডিম প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে পাওয়া যাচ্ছে, ফলে খাদ্যদ্রব্য হিসেবে এদের ব্যবহার করা মানে বিষমুক্ত খাবার, পুষ্টির অভাব নেই। অর্থাৎ, দুটো মিলিয়ে, খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত, সুস্বাস্থ্য তাই যৌক্তিকভাবে সম্ভব।

আর নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য? হাজারো-একটা জিনিস প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে ধরিত্রীনির্ভর পদ্ধতিতে করে নেয়া যায়। ‘সহজ জীবনের পাঠ’ সেটাই। সে নিয়ে পৃথক আলোচনা করা যেতে পারে।

আরো দেখুনঃ

ENGLISH VERSION

Instead of an Introduction

The text below is written by Pathik Basu. He once abandoned his PhD work and later took up a job at a big bank for several years, following which he took an early retirement. For a long time, he ran a magazine called “Shroyon” (established in 1996). The various issues of this magazine have explored a wide range of subjects—from Gandhi to Rabindranath to Marx—and discussed childhood education, adolescent intellectual development, as well as inequity, globalization, and alternative pathways of living and philosophies of praxis. Nowadays, Basu is initiating a quiet revolution through decentralized, community-based farming at a farmstead in the Ghutiari Sharif region in West Bengal, India. This is a remarkable initiative in the face of today’s massive ecological crisis. Similar back-to-the-earth movements are happening all over the world.

What exactly is this quiet revolution? It begins somewhat like a “personal” Satyagraha—although that “personal” recurrently emerges in a “non-personal” (Ubuntu we-ness) plurality through the intercommunion of inter-associations. This revolution avoids branding others as “enemies” and engaging in unnecessary violence or pillage; there is no malice, hatred, anger, or animosity—instead, there is a resistance rooted in love. This is where the concept of an aesthetic, artistic life (or aesthetics of existence) comes in. Yes, it’s about not becoming a bureaucratic “Vanguard” who tries to “win over the world through mere speech,” but about becoming the “change” oneself. Yes, “becoming.” It means moving beyond the level of “as it usually happens”—through multiple surplus zones of creative acts and dialogues. Here, the Yoga of Action mixed with knowledge seamlessly blends with the Yoga of Love (Premayoga). Stepping outside the pomp of institutionalization, completely forgetting the equation of degree-equals-job, this is where the lessons of simple living emerge.

Remembering Jibanananda, I say:

“Who can walk like simple folk?

Who can take a pause

in this light and dark

Like simple folk;

their kind of language and words

Who else can speak (…)

Sowing seeds like all others,
Yet — where is taste, where is longing for harvest?
Wearing the scent of soil upon the body,
Wearing the scent of water upon the skin,
Eyes lifted toward light with fervent hope,
Heart beating like a farmer newly alive —
Who then shall remain awake upon this earth?”

Nowadays, Pathik Basu introduces himself somewhat like this:

“From laborer to farmer, I’ve come a long way. Now, I till the land with love, nurturing the soil and cultivating hope. I envision a world where wealth loses its grip, and our bond with the earth and each other deepens. A world where love, compassion, and interdependence weave the fabric of our communities, and the beauty of life is cherished above material wealth.”

This is essentially the core message. Now, let’s read his words!

1. Regarding Principles

I have been able to accomplish a small amount of work, both by working in a village and by working from home. Based on that modest experience, I say: If you and I feel that we must do something for the Earth and for human society (be it a sacrifice or a repayment of non-monetary debt towards ourselves/natural world), it can be done from home. I desire a prosperous society. A society where the Earth remains generous and people hold each other’s hands (when these two things happen, the need for money greatly diminishes). Consequently, the social circulation of the limited money that is required—all of this can be initiated from home.

People are not just poor in money; they are destitute in three things: money, Earth, and companionship. If they tried to remain connected, if not fully absorbed, with the latter two, their poverty of money would lessen. This education and this action are today’s greatest necessity. I want to express this in a common tongue as: “Tree, Bird, Fifteen; Respect and Keep Company.”

• Tree and Bird mean the Earth. It means serving water, soil, air, light, and the sky. Keeping them vibrant. Ensuring water is uncontaminated, soil is pure, air blows non-toxically, light is unsullied, and having respect for the sky. And serving, to the best of our ability, all the lives that depend on them, from the microscopic to the gigantic. Thus, the simple words and simple practice: Tree and Bird. It will suffice if my immediate surroundings are full of these two. At least start with a tree. A teaspoon of soil holds a billion microbes. Now consider the amazing play of life that will revolve around a single tree. We will see the coming and going of birds, butterflies, and bees right before our eyes. We can accomplish this work in a very small space. Use the tree to capture sunlight. To capture water. Fill the soil with earthworms and weeds. Purify the air. Let the world’s comings and goings within your home become as pure as possible. It is achievable. A beautiful relationship with the Earth’s life can be created.
• Now let’s talk about Fifteen. We say—Come, let us stay close together—but our viewpoints are so different! The lesson we have practised since childhood, and still teach our children, is how to keep our hands away from others. Schooling? An education of heartless unsociability. I must be first! or Why can’t I manage this? Oh, how terrible! Hence, the introduction of Fifteen. In a slightly different way. Each of us is connected with about ten to fifteen other families. Your plumber, your electrician, the people from whom you buy vegetables, fish, meat, eggs—you have a relationship of love and trust with them. You can organise a similar Green Fair (Shobujer Mela) with them, and you can share your surplus (however small it may be) money, labour, and time. How much work can be done when hands join! It is being done. Spend one, two, three, or four holiday weekends a month with these people, their families, and in their neighbourhoods. You will see what immense joy is spread among everyone, and Santiniketan. Instead of one, fifteen Santiniketans are built! It has happened. It is happening. This is what Rabindranath wanted (I understood Rabindra’s philosophy this way after speaking with Amlan Datta).

A dialogue can certainly continue on this, but let’s not just talk; let us light up our homes by planting a tree, and once bees come into the house, the rest will follow automatically!

2. Regarding Praxis

There is a clear answer to the problem of any person’s well-being or lack thereof. A very clear answer. We must move away from a money-dependent life to an Earth-reliant, Earth-centric life and a hand-holding mindset. I have worked on this. The ways and methods by which we can arrange for shelter and food—i.e., nutrition and health—in a small space with (initially) little money and (later) for free are no longer unknown to me. First, let us produce our own food and essential daily goods—this act of creation is a significant revolutionary step. A book edited by me on this subject, ‘Byaktittyo, Samiti o Shanto Biplob’ (Personality, Communion and Quiet Revolution), was published in 2007.

Let’s skip the theory for now and briefly talk about what can be done immediately in practice or what has been accomplished. You can contact me afterward if you feel the need. Only those who want to work should contact me. Your home, veranda, balcony, roof, and your sincerity are the only two things required.

We have experimented with mixed farming in a small area, where comprehensive cultivation has been possible almost free of cost, using natural methods, and with the efficiency that one’s waste becomes another’s nutrition. The standard unit for our experiment (and it is a standard now, and we are communicating it to the wider society because it has become a standard) is an area of 250 square feet. Of this, 150 sq ft must receive adequate sunlight. The remaining 100 sq ft can be in light and shade.

• We have dedicated 100 sq ft of this 250 sq ft to mixed vegetable cultivation. We have done mixed vegetable farming with at least 8-10 varieties of vegetables that naturally grow in that season in this 100 sq ft area. This area requires full sun.
• In the next 100 sq ft, we have dug a tank. The depth of the tank is six feet. We dug a tank to properly understand the experiment. If poor people dig a pit in the ground, it will also work. We have farmed fish in this tank. Indigenous fish. Primarily Shingi, Magur, Lata, and Koi (types of catfish and other local fish) are included.
• The remaining 50 sq ft is left. A single papaya and a single banana plant can grow smoothly here. 25 sq ft for one papaya, 25 sq ft for one banana—totaling 50 sq ft. The space between these two trees accommodates a 40 sq ft cage. The cage is a duplex; the ground floor can house at least six ducks, and the top floor can house six chickens.

Now let’s look at our yield.

• We can get an average of one kilo of vegetables every day from the 100 sq ft vegetable farming area. Note this: one kilo of vegetables every day.
• We can get fish from the 100 sq ft tank (we have not yet audited the fish correctly, so we cannot provide this data).
• We get 2 to 3 papayas per week, and definitely one banana per day.
• We get four eggs daily, and meat is optional.

Thus, a family, assuming it has four or five members, does not have to starve with what is produced in 250 square feet. Since these vegetables, fish, meat, and eggs are obtained through natural methods, consuming them means toxin-free food and no lack of nutrition. Therefore, combining the two, food and nutrition are secured, and good health is logically possible.

And daily necessities? A thousand and one items can be created using natural, Earth-reliant methods. That is the ‘Lesson of Simple Living’. That can be a separate discussion.