অর্থনীতির অতিমারী, অর্থের-নেতির বি-কল্প-না

 অর্থনীতির অতিমারী, অর্থের-নেতির বি-কল্প-না 


অর্থনীতির অতিমারী, অর্থের-নেতির বি-কল্প-না

দেবপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় -এর “অর্থ-নী-নেতি” কিতাব বিষয়ক আলোচনা ও পরিপ্রশ্ন

আখর বন্দ্যোপাধ্যায়⤡

সৌজন্যেঃ মান্দাস⤡

Posted on 29th March, 2025 (GMT 18:40 hrs)

আজকে আমরা এখানে জড়ো হয়েছি এই বিশেষ বইটা নিয়ে কথাবার্তা-আলোচনা-বাদ-বিবাদ তৈরি করতে। সে ক্ষেত্রে যে কেউ, অর্থাৎ যারা এই বইটা ইতমধ্যেই পড়ে ফেলেছেন কিংবা স্রেফ নামটা অথবা প্রচ্ছদটা দেখে মজা পেয়েছেন—তাঁদের মতামত দেওয়ার খোলা সুযোগ রইলো। এ’পাশ থেকে কেবল আমরা দুজন একঘেয়ে বকবক করে যাবো, তা কি কখনো হয় নাকি? আজকের মান্দাসের উদ্যোগে এই বই-কথা তথা বই-আড্ডা (হাইয়েস্ট লেভেল অফ আড্ডা হয়ে উঠবে কি?)-র পোস্টারের শিরোনামে লেখা হয়েছিলোঃ পিতা-পুত্রের ডায়ালগ। এখানে আমার একটা ছোট্ট বক্তব্য আছে।

অর্থ-নেতি কি এবারে পিতৃনামের পরাক্রমের নেতি ও ইতি ঘটাবে? সেটাই দেখা যাক, কী হয় না হয়! আমার যদিও ওরকম কোনো গ্র্যান্ড এইম নেই। আসলে ‘সংলাপ’ কথাটার মধ্যেই সেই সম্ভাবনাটা যেন লুকিয়ে আছে—তার্কিক সহাবস্থানের পরিসরে। যদিও আমি অর্থনীতি কিংবা নেতির ব্যাপারে কোনোভাবেই কথা বলবার জন্য কতোটা যোগ্য মানুষ, তা ঠিক জানি না। তবে এ বইটা একরকম গড়ে উঠেছে আমার সঙ্গে বাবার যৌথ অংশগ্রহণে, যদিও এই বইয়ের বেশিরভাগ মূল লেখা এবং যাবতীয় কাজকম্মো বাবা করেছিলো নিতান্তই আমার শৈশব এবং বাল্যকালে, যেসবের স্মৃতি, বলাই বাহুল্য, আমার একেবারেই নেই।  সেসব লেখা বেশ খানিক পরিবর্তিত, সংশোধিত এবং পরিবর্ধিত হয়ে উপস্থাপিত হয়েছে নতুন রূপে এই বইয়ের মলাটবন্দী অবস্থানে।

আমি খুবই সংক্ষেপে বইটার মূল উদ্দেশ্য এবং প্রকল্পের একটা মোটামুটি দায়সারা সামারি করবার চেষ্টা করছি একরকম খোলামেলা পাঠপ্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে। এ ধরণের বইকে দু-চার কথায় বেঁধে ফেলা যদিও বেশ চাপের ব্যাপার, কিন্তু বইটার মূল লক্ষ্যটা যথেষ্ট পরিষ্কারঃ মূলধারার বা মূলস্রোতের অর্থনীতি, যা কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় (এক কথায়, ভাবাদর্শ চালানকারী প্রতিষ্ঠান) এবং অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে মুখ-চোখ-কান-বুজে চালানো এবং পালন করা হয়, তার বিরোধিতা করা। বেশ অনেক বছর আগেই মাইকেল হাডসন বলেছিলেনঃ “Academic Economics is running on wrong track.” তাছাড়া এই বই তত্ত্বকেন্দ্রিক বিরোধিতাতেই থেমে থাকেনি কেবল, দেখিয়েছে আরো নানান সম্ভাব্য প্রায়োগিক বি-কল্প-না-র পরিসর। তাই এই বইয়ের চারটে লেখা মূলত তাত্ত্বিক, বাকিগুলো লেখকের ভাষায় “মাঠকম্মো”-এর ফল, যদিও তত্ত্ব আর প্রয়োগের এই জোর করে চাপানো বাইনারি বা দ্বিকোটিককে বারবার চ্যালেঞ্জ করছে লেখক।

কিন্তু, আগেভাগেই “বিরোধিতা”র সুর কেন? আজকাল ভারতবর্ষে কিংবা পশ্চিমবঙ্গে বিরোধিতার হাওয়াগুলোকে (সে কমেডিয়ান হোক বা এ-আই চ্যাটবট) দমবন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে যখন, তখনই আমরা আসর জমিয়ে বসেছি একটা এমন বিষয় নিয়ে কথা বলতে, যা আমাদের রোজকার শুনে ও বলে আসা কয়েকটা ব্যাপারকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করে। কিরকম ব্যাপার সেগুলো?  

  1. কাকে বলি উন্নয়ন বা ‘বিকশিত’ অবস্থা? কাকে বলি অর্থনৈতিক চাবিকাঠির মানদণ্ডে “সাক্সেস/সফলতা”, কাকেই বা বলবো “প্রগতি”?
  2. কিভাবে দেখবো আমাদের বেড়ে চলা “আরো চাই আরো চাই” প্রবণতাকে চাগিয়ে দেওয়া বিশ্বায়নের হাওয়ামোরগকে?
  3. “এটা আমার সম্পত্তি”— এ কথা কি আদৌ বলা চলে? এই “আমি এবং আমার”, মালিকানার ব্যাপারটা বর্তমান অর্থনৈতিক সম্পর্কে ঠিক কিরকম? কিসের মালিকানা, কেন মালিকানা?
  4. ‘টাকা’ নামক অসম জিনিসকে সমান করবার ঐন্দ্রজালিক রূপক দিয়ে সবকিছুকে, মায় মানুষ এবং প্রকৃতি/নিসর্গকে মেপে ফেলবার যে প্রবণতা—সেটা কতদূর ঠিক, নাকি আদতে ক্ষতিকারক?
  5. মানুষ-না-মানুষকে স্রেফ সংখ্যায় পরিবর্তিত করে ফেলা যায় কোন অর্থনীতির দাঁড়িপাল্লায়? গ্রেগর সামসারা পোকা না হয়ে কখন প্রাণহীন সংখ্যা হয়ে ওঠেন, নিজেদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে?
  6. অর্থনীতিকে নিয়ে কথা বলা কী কেবলমাত্র এক বিশেষ অর্থের অর্থনীতিকে নিয়েই কথা বলে যাওয়া, নাকি তার বাইরের বিশ্ব সাথে যোগ বিহারের সমবায়ী পরিসর গুলো কী— আদৌ সেসব আছে কী না, সেটা নিয়েও কথা-বার্তা-প্রতর্ক চালানো? এ ক্ষেত্রে রঘুনাথ শিরোমণি, রবি ঠাকুর, মার্ক্স, গান্ধীদের ভূমিকাগুলোকে নতুনভাবে, ডগমা থেকে বের করে চর্চায় এবং চর্যায় আনা যায় কি? মূলধারার অর্থনীতির চক্করে অ-গোচরে থাকা এখনকার সংকটগুলোকে চিহ্নিত করবো কিভাবে?

বইটায় ঠিক এমনতরো সমস্যা-প্রশ্নের বিষয়গুলো (এবং এর সঙ্গে সংযুক্ত আরো বিষয়) নিয়েই নিরন্তর কথা-বার্তা চালানো হয়েছে। এবং সেই কারণেই এই বই জরুরি হয়ে ওঠে আমাদের বর্তমান সময়কালের পরিপ্রেক্ষিতে।

আমি নিজে প্রকৃতি, পরিবেশ, বাস্তুতন্ত্র—বা নিসর্গের দর্শন ও নৈতিকতার ব্যাপারে আজকাল মূলত অ্যাকাডেমিক এবং অ্যাক্টিভিজম-কেন্দ্রিক কাজ করছি বলে বইটা আমার কাছে অন্য আরো কিছু প্রশ্ন নিয়ে এসেছে। তবে সেসবে একটু পরে যাবো। আমার আগে বলা প্রশ্নগুলো নিয়ে ভাবতে ভাবতেই চোখ রাখা যাক বইটার প্রচ্ছদে। এঁকেছেন প্রভাকর পাচপুটে। কী দেখতে পাচ্ছি? আপনারা বলুন একটু। শুনি বরং। তারপর আমিও চেষ্টা করবো আমার মতো করে দেখবার, বোঝবার। দেখা আর বোঝা তো অনেকধরণের হয়!

আমার জন্য এই প্রচ্ছদের ব্যাখ্যাটা আপাতত খানিকটা এরকম। পরে পাল্টাতেও পারে। মানুষ তো স্থবির নয়, সৃজনশীলতার ক্ষেত্রে তো নয়ই। ফ্রেমে বাঁধা আঁকাটার পর্যায়ভাগ এবং কম্পোনেন্ট ধরে নিয়েই একটু আলোচনা হোক। প্রচ্ছদের সামনের ‘ঘোড়া”টাকে দেখুন। তার শরীর দু’ভাগ হয়ে গিয়ে মাথাটা বেলুন লাগিয়ে আকাশের দিকে উড়ে যাচ্ছে, সেই ঘোড়ার চোখদুটো চাপা দেওয়া। কেন? সে নিজের বিশ্বে অবস্থিত, যাপিত ‘এখন’ থেকে অনেক দূরে ভেসে যাচ্ছে। সেই যাপিত ‘এখন’-টা আবার দড়ি দিয়ে বাঁধা একটা পাথুরে অস্তিত্বের চৌহদ্দির মধ্যে। দড়িতে পেছন থেকে অদেখা কেউ যেন মারছে অদৃশ্য এক টান। ওদিকে মাথা এবং ঘাড়ের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বাঁধা বেলুনগুলো তৈরি করছে, বানিয়ে তুলছে রঙচঙা এক স্বপ্নের মায়াবী জগৎ। ভানের বিশ্বনির্মাণ, যেখানে সত্যি-মিথ্যের বাজারচলতি বর্গভাগ গুলিয়ে যাচ্ছে, বরং গুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে কিছু বিশেষ বাজারী শাসনতান্ত্রিক গোষ্ঠীর স্বার্থে, যাঁদের অ্যাডাম স্মিথ বলেছিলেন “masters of the humankind”। মাথাটা আকাশে, বাকি শরীর বন্ধ অবস্থায় ভূতলাবস্থিত। এবার সেই চোখ বাঁধা মাথা মনে করছেঃ অনেক চাওয়া-খাওয়া-পাওয়াটাই একমাত্র সুখের, আনন্দের ডেফিনিশন। এবং সেই প্রচুর চাওয়াকে লোক ডেকে দেখানোটাও যেন হয়ে উঠছে বাড়তি আনন্দের রশদ। পিছনে দূরে আবছা দেখা যাচ্ছে একটা কিছুর তকনিকি উৎপাদন প্রক্রিয়া— যা থেকে এই উড়ন্ত মুন্ডু বিচ্ছিন্ন। পিছনের পাথুরে বাড়িটায় (যেখানে একটা ঘোড়ার চ্যাপ্টা মাথাও চোখে পড়ছে, মস্তিস্ক পাথুরে হয়ে গেছে) চিমনির জায়গায় আরেকটা মড়া বা জ্যান্তে মড়া ঘোড়ার মাথা দৃশ্যমান, যার শুধু একটা আকার রয়েছে, কিন্তু চোখ-নাক—কিছুই যেন আর নেই। তার আবার খুদে দুখানা পা রয়েছে, ট্রাইপডের স্ট্যান্ডের মতোন খানিকটা। কিন্তু সে যেন স্থবির, কোনো ভঙ্গি নেই, গতি নেই, নড়চড় নেই— সে কেবল ঠায় দাঁড়িয়ে আছে এই আরেকটা ঘোড়ার মুণ্ডুর ঠিক উল্টোদিকে মুখ ঘুরিয়ে। মুখ ঘুরিয়ে থাকাটা কিরকম? এই কথাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে প্রচ্ছদ থেকে তত্ত্বে উত্তরণটা এবার বেশ সহজ হবে বলেই মনে হয়।

মূলধারার/স্রোতের অর্থনীতি বলে যে ছাতা-শব্দ চালু আছে, তার মধ্যে বেশ অনেকগুলো ধারা এবং প্রবণতা রয়েছে। সেই ধারাগুলোর নিজেদের মধ্যে বিস্তর ঝগড়াও রয়েছে (যেমন মিল্টন ফ্রিডম্যানদের শিকাগো স্কুল, মার্শালদের কেম্ব্রিজ স্কুল, হায়েকের অস্ট্রিয়ান স্কুল ইত্যাদি)। কেউ বলেন বাজার চলে নির্দিষ্ট বাজারের নিয়মাধীন হয়ে, কিছু মডেল দিয়ে ধরে ফেলা যায় অর্থনৈতিক প্রক্রিয়াদের, যা বাঁধাধরা প্রাকৃতিক নিয়ম নামক নির্মাণের আয়না-প্রতিবিম্ব। কেউ বলেন বাজারের মূল ব্যাপার হলো পাশবিক প্রবণতাদের (animal spirits)-র দল, যারা কেনা-বেচার ব্যাপারটা সবটা জানেনা, যাদের জ্ঞানটাও বেশ খানিকটা বেঠিক, এমনকি যাচ্ছেতাইও বলা চলে—কিন্তু তারাই আবার বিভিন্ন বৌদ্ধিক চয়ন করে করে বাজার-অর্থনীতিটাকে চালাচ্ছে নিজেদের ব্যক্তিকেন্দ্রিক সুখবৃদ্ধির তাগিদে। আরো অনেক তাত্ত্বিক অমিল রয়েছে, তবে এখানে সেসব আর বলবো না। মোটকথায় এই ধারাগুলোকে তর্কের খাতিরে একটা ডেজিগনেশন বা সংজ্ঞা-বেড়ার মধ্যে নিয়ে আসা যায়ঃ নিওক্ল্যাসিকাল ইকোনমিক্স (নয়া-ধ্রুপদী অর্থনীতি), যার সঙ্গে দরবারী ফিসকাল অডিটিং-এর হিসেব নিকেশের আজকাল আর খুব একটা তফাৎ দেখা যায় না, সেটা চলে মূলত দুটো পূর্বশর্তেঃ Rational Expectations and Efficient Market। মানুষকে গণনা-মেশিন হিসেবে ধরে নিয়ে এর মোদ্দা কথাটাই হলোঃ Prudence and Price and Profit and Property and Power (P-obsession). এ কথা বলেছেন দেইরদ্রে ম্যাকলস্কি, তাঁর Why Economics Is On the Wrong Track লেখায়, যেখান মূলধারার অর্থনীতি তাঁর মতে স্রেফ সময় নষ্টের কারবার।

১৯৮৯ পরবর্তী আমাদের এখনকার নয়াউদারবাদী অর্থনীতির কাঠামোয় নিওক্লাসিকাল অর্থনীতির বিশেষ কিছু ভার্শনকে তোল্লাই দেওয়া হচ্ছে, যা স্থানীয় বহুমাত্রিকতাদের নিজের মধ্যে পুরে ফেলা বিশ্ববাজারকে লেজিটিমাইজ করবার বা তার অদৃশ্য হাত-পোক্ত করবার মাধ্যম হয়ে উঠছে। তৈরি হচ্ছে দান-খয়রাতি-নির্ভর অর্থনৈতিক জগতের মারণ ফাঁদ, ঋণের প্রকোপে জর্জরিত সামগ্রিকতার নজরে দেখা বৈশ্বিক দক্ষিণ। এসবটাই চালাচ্ছে তিনটে রাক্ষুসে সংগঠনঃ WB, IMF এবং WTO। তৈরি করা হচ্ছে বিজ্ঞান=প্রযুক্তিতন্ত্র—বাজারনির্ভর অর্থনীতি—শিক্ষা প্রতিষ্ঠান—রাষ্ট্রের অশুভ আঁতাত।  মানুষকে ফেলে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন রিস্ক জোনের ঘেরাটোপে। এই ধরণের অর্থনীতিতে স্থান পাচ্ছে কেবল সংখ্যাদের বাড়বাড়ন্ত, আধিপত্য, আর সেই সংখ্যার নজর দিয়ে শরীর-মন-সমাজ-রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ। এক্ষেত্রে প্রাকৃতিক জগৎ বা নিসর্গকে মাগনা উপহার হিসেবে ধরে নিয়ে বিনিময় মূল্যের অধীনে পাচার করে দেওয়া হচ্ছে, যার ফলে তৈরি হচ্ছে মানুষের কারণে নিসর্গের সার্বত্রিক সংকটকাল। নিসর্গের সত্বাধিকারদের বেমালুম ভুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বলা যেতেই পারে, যেমনটা এই বইটাও নানান ভাবে বলতে চেয়েছে, যে এই মূলস্রোতের প্রাতিষ্ঠানিক, সদাগর-পোষিত, ফান্ডেড অর্থনীতি একাধিক ব্যাপার-স্যাপারকে ইচ্ছাকৃতভাবে “ভুলিয়ে দেওয়ার” চেষ্ঠাচরিত্তির। এখানে একটা বড়ো সমস্যা হলো এই ধরণের অর্থনীতির আওতায় যেটাকে আমি বলি “The Reductionist GDP Frame of Reference”, যে প্রবণতাকে চাগিয়ে দিয়ে নয়া-ধ্রুপদী অর্থনীতিতে এমত অনেককিছুকেই আড়ালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, ভুলিয়ে দেওয়া হয়। যেমন, ছায়া-অর্থনীতির যাবতীয় হিসেব-নিকেশ। যেমন, সিলিকোসিস আক্রান্ত খাদান-মজুরের বিচারহীন মৃত্যু। যেমন, অর্থনীতির দার্শনিক ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ। যেমন, ঘর-পরিবার/হাউজহোল্ডের অর্থনীতি ইত্যাদি ইত্যাদি। তাই ভুটান জাতীয় অগ্রগতির পরিমাপের জন্য জিডিপি (GDP)-কে অস্বীকার করে “মোট জাতীয় সুখ” (GNH) প্রবর্তন করেছে, যা শুধুমাত্র অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নয়, বরং সামগ্রিক সুস্থ জীবন এবং সুখের বড়ো অর্থের উপর জোর দেয়। মনে রাখবেন, ভূটান ইতমধ্যেই প্যারিস অ্যাগ্রিমেন্টের “নেট জিরো গোল”-এ পর্যন্ত নিজেদের পৌঁছে ফেলেছে।

যাই হোক, “অর্থনেতি” বইটা নিওক্লাসিকাল ইকোনমিক্সের এইসব একপেশে ধ্যান-ধারণা এবং বিশ্ববীক্ষার বিরুদ্ধে এক জেহাদ। কিন্তু এ বই কতদূর সফল সেক্ষেত্রে? তাই আমি এবার সরাসরি বাবার কাছে চলে যাবো। তোমাকে কটা প্রশ্ন আছে। তবে এই প্রশ্নগুলো হয়তো “আমি” খানিক “আমার জ্ঞানতাত্ত্বিক জগৎ” থেকে বেরিয়েই, বা কিছুটা টু-এন্ড-ফ্রো যাতায়াত করেই করবো। সেখানে কখনো “আমি” থাকবো, কখনো সেই “আমি”র আবছা বিরুদ্ধ হদিশ হিসেবে থাকবো কেবল। আগে মূলত তাত্ত্বিক লেখাগুলো নিয়ে প্রশ্ন করে তারপর চলে যাবো মাঠকম্মের লেখাগুলোয়ঃ

) “স্বত্ব নিয়ে সমস্যার নিবেদন”-এ সত্বাধিকারের আলোচনায় তুমি অনেকটাই নিঃস্বত্ব হওয়ার, অস্বামিকত্ব বা নাগার্জুনের নিঃস্বভাবত্বের কথা অন্যভাবে এনেছো। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো, ব্যক্তির সত্বাধিকার খুব ‘মিনিমাল’ সেন্সেও থাকলে তার কাজেকম্মে প্রবৃত্তি বাড়ে- এমন একটা ধারণা তো আছেই। যে কারণে স্তালিনের জোরজবরদস্তি কালেক্টিভাইজেশনের সময়ে কিংবা মাওয়ের সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় কৃষক-শ্রমিকেরা ক্রমশ কাজে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছিলো, কারণ “আমার জমি”র মধ্যে যে সাংস্কৃতিক টান এবং অন্তরঙ্গ সংযোগটা রয়েছে, সেটা আর সেখানে থাকছে না। সবটাই সমাজ বা রাষ্ট্র যেন বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে গিলে ফেলছে। এটাকে কিভাবে “আমার-ত্ব”-এর সমালোচনায় সামলাবে, রঘুনাথ শিরোমণির পথে স্বকীয়-পরকীয় ভেদ ধরে বললেও? চরম ভোগ বা কতৃত্বের দিকে না গিয়ে এই নির্দিষ্ট অর্থে সত্বাধিকারের বর্গ বজায় থাকলে যদি কাজে গতি আসে এক ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মানসিক বোধের জায়গা থেকে— সেখানে সমস্যা কি?

) “অন-অর্থনীতিবিদ রবীন্দ্রনাথঃ বিত্তভূমি থেকে চিত্তভূমিতে” লেখাটাতে চাষা-বুনো রবি ঠাকুর-আলোচিত “লোভ রিপু”র কথা এনেছো যথাযথভাবেই। তোমার মতে এই লোভ কি আদৌ প্রকৃতিদত্ত-সহজাত-রিপু, যেগুলো হয়তো একদল সার্ভাইবাল/ডিফেন্স মেকানিজম, সেই হবস-এর বলা ঝামেলা-ঝঞ্জাটে ভরা “স্টেট অফ নেচার”-এর উত্তরাধিকারে পাওয়া বৈশিষ্ট্য? (পাতা ১৮২) নাকি কিছু বিশেষ আর্থ-সামাজিক সম্পর্কের নেটোয়ার্কের অন্দরে এই লোভের জন্ম ঘটানো হয়, যাতে রবি ঠাকুরেরই বলা সেই epidemic of voracity-কে বজায় রেখে তা থেকে কিছু হাতেগোনা লোক ফায়দা তুলতে পারে? যদি তা সহজাত প্রবৃত্তিই হয়, তবে খুবজোর তার মাত্রার হেরফের ঘটানো যায় মাত্র, কিন্তু সামগ্রিকভাবে তার নিরসন কি তবে বেশিরভাগের পক্ষে সম্ভব— অপবর্গ/মোক্ষলাভ না হলে? সবাই তো আর স্থিতপ্রজ্ঞ বুদ্ধ হয়ে ওঠবার ক্ষমতা রাখেন না, অধিকারী ভেদ থাকে। এই প্রশ্নটা করছি কারণ লোভের দর্শন স্পিনোজার ক্ষেত্রেও একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, এবং নয়া-ধ্রুপদী অর্থনীতির নেতিকরণে এই লোভের প্রাতিষ্ঠানিকিকরণ, ভাগবাটোয়ারা, দিল্যুজ-গুয়াত্তারি-কথিত ডিজায়ারিং মেশিনের জন্ম এবং তার মাঝে রক্তকরবীর ব্যাঙের মতো “টিকে থাকা” অন্যতম মূল বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এই রিপুর সঙ্গে “পাপ”-এর ধারণার কি সম্পর্ক—যখন নয়া-ধ্রুপদী অর্থনীতি পরিবেশ দূষণের কারণকে স্রেফ “বহিরাগত” (এক্সটার্নালিটি) হিসেবে ধরে তার ফলে ঘটা বাজারের ফেইলিওরকেই একমাত্র এক বিশেষ অর্থে ‘পাপ’ হিসেবে ধরেন? আমরা দেখেছি কেমব্রিজ স্কুল (যেমন, মার্শাল) এবং শিকাগো স্কুল (যেমন, বেকার) দক্ষতার চালক হিসেবে অত্যধিক আত্ম-স্বার্থ (এবং লোভ)কে মডেল হিসেবেই নেয়, নৈতিক ব্যর্থতা হিসেবে নয়।

 “মূদ্রার অর্থনেতি”-তে নিসর্গ-চল (nature ‘n’ variable)-এর ধারণাকে মার্ক্সের টাকা-রূপক-ও উতপাদন-সম্পর্ক বিষয়ক আলোচনায় নিয়ে এসে একটা বেশ দরকারি কাজই করেছো। তবে সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র “কাঁচামাল”-এর কথা কেন বললে? কেন এলোনা মার্ক্স-আলোচিত শ্রমের মাধ্যমে (পণ্যায়িত শ্রমশক্তি নয়) প্রকৃতি-সংস্কৃতির “metabolic interaction”-এর কথা? কেনই বা এই নিসর্গ-চল-এর প্রসঙ্গে আলোচিত হলোনা “নৈসর্গিক লিমিট”-এর ধারণা, যা আবারো সেই অনিল আগরওয়াল কথিত “নৈসর্গিক সত্বাধিকার”-এর সঙ্গে যুক্ত? এই ব্যাপারটা কি ইচ্ছাকৃতভাবে এড়িয়ে যাওয়া নাকি অন্য কিছু?

 পারক্য এবং প্রয়োগের দার্শনিক মার্ক্সের টাকা-পণ্যের আলোচনা করতে গিয়ে বেদান্তের কথা আনবার কি খুব একটা প্রয়োজন ছিলো? বিশেষ করে অদ্বৈত বেদান্ত যখন এক চরম এককের দাবী অনুযায়ী তাদের যাবতীয় তত্ত্বালোচনাকে সাজিয়েছে, এমনকি অধ্যাস বা অধ্যারোপকেও, সেখানে মার্ক্সের বিশ্ববীক্ষা এমনতরো চরম একক সত্যের থেকে বহুদুরে অবস্থান করছে। মেলাবে কিকরে? জ্ঞানতাত্ত্বিক জগাখিচুড়ী ঘটবেনা?

) ‘বি-কল্প-না’ আমার কাছে তাত্ত্বিক লেখাগুলোর মধ্যে সবথেকে জরুরি কাজ। কারণ এটাতে মানুষ, না-মানুষের দুঃখান্তের কথা এসেছে খতমের রাজনীতি এবং অহিংসার হিংস্রতা পেরিয়ে। প্রস্তুত করা হয়েছে সমসাময়িক সমস্যার লিস্টি। আমাদের প্যারাসাইট-জীবনের বিভিন্ন হিপোক্রিসিগুলোকেও অ্যাড্রেস করেছে এ লেখা, নির্দিষ্ট করতে চেয়েছে এখনকার অ্যাজেন্ডাগুলোকে, যা অনেকটাই মননে স্বরাজ, শান্ত বিপ্লব এবং ব্যক্তিগত সত্যাগ্রহের প্রকল্পের পথ ধরেই যেন। এর বিপ্রতীপে বা উল্টো কোনো অভিমুখে আমার তেমন কোনো বক্তব্য নেই। কিন্তু এখানে আমার একটা প্রশ্ন আছেঃ এই লেখার প্রসারণ যদি ঘটাতে চাও ঠিক আজকের, এই মুহুর্তের ভারতবর্ষের ভয়প্রদ অর্থনৈতিক অবস্থায়, সেটা ঠিক কিভাবে করতে চাও? কী কী জিনিস অ্যাড হবে এবং/অথবা অপসারিত হবে সেক্ষেত্রে? তুমি কি একধরণের আত্মশক্তি-নির্ভর, এফডিয়াই “আত্মনির্ভর্তা”-হীন ইকোলজিকাল ইউটোপিয়ার (প্রাকৃতিক কল্পরাজ্য) কথা বলতে চাইবে, যেভাবে বেশ খানিকটা এই লেখায় বলেছো? সেটা হলে ওরকম ইউটোপিয়া একদম সাধারণ মানুষজনের জন্য কিভাবে প্রাসঙ্গিক এবং রিচেবেল হয়ে উঠবে? নাকি আর্মচেয়ার আকাদেমিওক্রাসির চার-দেওয়ালেই থেকে যাবে? সেটা কাটানোর পথ কি বাতলে দেবে মানবেন্দ্রনাথ রায়ের সাংস্কৃতিক রেনেসাঁস বিফোর রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক পালাবদল?

এবার মাঠকম্মের লেখাগুলোর সামগ্রিক, থেম্যাটিক আলোচনা করতে চাই। #

) তুমি কলকাতার “রাশিবিজ্ঞানের রাজপ্রাসাদ” নামে একদা খ্যাত এক প্রতিষ্ঠানে আপিসিভাবে থাকাকালীন হঠাৎই কেন মূলধারার অর্থনীতির বিরোধিতা করতে বসলে, যার জন্য তুমি পাথর খাদান-ইটভাটা-শপিং মল-চটকল-এর মাঠকম্মো করে এই চারটে লেখা লিখলে? অনেকেই হয়তো এটাকে একধরণের প্রচ্ছন্ন হিপোক্রিসি বলে দাগাতে চাইবেন, কারণ সেই রাশিবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান তো নিজেই এই ধরণের স্পনসর্ড অর্থনীতি প্র্যাক্টিস করে থাকে। ব্যবস্থার অংশ হয়ে ব্যবস্থার বিরোধিতাটাকে কিভাবে দেখো? এই ব্যাপারটায় তোমার নিমেদাও তোমাকে কাউন্টার করেছেন “নেড়া বেলতলায়” লেখাটায়। তুমি নিজেও বইয়ের বিভিন্ন জায়গায় এ ব্যাপারটাকে অ্যাড্রেস করেছো। এটা যদি আরোএকটু স্পষ্টভাবে বলো। তাছাড়া তুমি সেই প্রতিষ্ঠানের ভাষাতত্ত্ব বিভাগে থেকে হঠাৎ করে অর্থনীতি (সে যে অর্থনীতিই হোক না কেন), যা একেবারেই তোমার বিষয় নয়, সে ব্যাপারে মাথা ঘামাতে গেলে কেন? সেটা কি অনধিকার চর্চা বলে ভাববে না অনেকেই?

) তোমার মাঠকম্মের লেখাগুলোতে “নিমে দত্ত”-র সদা-সর্বদা উপস্থিতি দেখতে পাই। অর্থনীতির দার্শনিক এবং সমাজতাত্ত্বিক আলোচনায় হঠাৎ ‘সধবার একাদশী’-তে ফিরে যাওয়া কেন?

) এতো জায়গা থাকতে চট কল-পাথর খাদান-ইটভাটা-শপিং মল কেন? কোনো বিশেষ কারণে বেছে নিয়েছো? সেটা কি অ্যাক্সেসের সুবিধের জন্য, কারণ মাঠকম্মোগুলো যেহেতু সেলফ-ফান্ডেড।

) এই প্রত্যেকটা মাঠকম্মের ক্ষেত্রেই তোমার মধ্যে দেরিদার বয়ানে লেভি স্ত্রোসের সেই Anthropologist’s Ambivalence (নৃতাত্ত্বিকের দোটানা) লক্ষ্য করা যায় অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে— “ডিক্লাসড” হওয়ার প্রবল বাসনার মুহূর্তে, যদিও তাকে কনফ্রন্ট করবার প্রয়াসও করেছো প্রকৃতি-সংস্কৃতি দ্বণ্যুককে ভেঙে। তবু যখন মাঠকম্মো চলাকালীন মার্গারেট মিড কিংবা ম্যালিনোস্কির পথ অনুসরণ করে তুমি খনি-খাদান মজুরদের সঙ্গে দিনরাত কাটাচ্ছো, তাদের মতোই খাওয়া-দাওয়া করছো, খাটিয়াতে শুচ্ছো, তখন কি সেটা বেশ খানিকটা গিল্ট-ড্রিভেন নয়, সুপ্তভাবে হলেও? মানছি তুমি বহু ফান্ডেড অ্যাকাডেমিশিয়ানদের দল থেকে বেরিয়ে আসবার ক্রমাগত প্রয়াসটুকু অন্তত করেছো/করছো। কিন্তু তুমি তো যাপিত অভিজ্ঞতাদের “ট্রেড” করিয়ে বা অদল-বদল করিয়ে নিতে পারছো না সেখানেও, একটা দূরত্ব থেকেই যাচ্ছে তোমার শ্রেণিগত এবং জাতপাতের প্রিভিলেজের দৌলতে। যেমন তোমার অন্য একটা লেখা (যা এই বইতে নেই), আয়লা-ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মাঠকম্মে নিজেকে তুমি ‘পাতি বুর্জোয়া’ বলেছো। তোমার নজরটা, সে তুমি যতোই বলো, আলোকপর্বী ধ্যান-ধারণা থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে এই “অন্য” জীবনগুলোর ইমিডিয়েসি বা ‘তৎক্ষণাৎ’কে বাগে আনতে পারছে না। এবং যখন মাঠকম্মের পরিসর থেকে প্রত্যাবর্তনে যে-কে-সেই জীবন-যাপনেই ফিরে আসতে হচ্ছে তোমাকে— তখন কোথায় সেই তোমার উল্লেখিত নাল ওয়ার্কারদের উপস্থিত অনুপস্থিতি, কোথায় সেই ইটভাটার শিশুশ্রমিকেরা, দাদ-হাজা-ম্যালেরিয়ায় ভোগা পাটচাষীরা, কোথায়ই বা সিলিকোসিস আক্রান্ত নিরাপত্তাহীন মজুরেরা? ন-অন্য, অনন্য ধারার অর্থনেতি-বীদ কিভাবে এর থেকে বেরোবেন, আদৌ পারবেন কি? In General অ্যাকাডেমিশিয়ানরা কি আদৌ কখনো পুরোপুরি অ্যাক্টিভিস্ট হয়ে উঠতে পারবেন?

) একদম শেষে চলে আসি মূলধারার অর্থনীতির এড়িয়ে যাওয়া একটা বিষয়েঃ হাউজহোল্ড, ঘর-পরিবারের অর্থনীতি। ম্যালথাসের পজিটিভ চেকস নিয়ে তোমার আপত্তি জানিয়েছো মাঠকম্মের লেখাগুলোতে। কিন্তু আমাদের দেশের জনসংখ্যা যে হারে লাফ দিয়ে বাড়ছে, তাতে একদম পরিবারের স্তরে পপুলেশন কন্ট্রোলের কি দরকার নেই? অবশ্যই আমি যুদ্ধ, মন্বন্তর বা অতিমারী তৈরি করতে বলছিলনা। আমি বরং এখানে আরেকটা টার্ম হাজির করবোঃ প্রিভেন্টিভ চেকস— যা সেক্স এড্যুকেশন, পরিবার পরিকল্পনা বা জন্ম-নিয়ন্ত্রণ, কন্ট্রাসেপশনের মাধ্যমে জাতীয় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের অন্য উপায়ের কথা বলবে। এর কথা বলেন বিশেষত নয়া-ম্যালথাসবাদীরা, যেমন ক্লাব অফ রোম। ক্লাব অফ রোমের ২০২২-এর রিপোর্ট, আর্থ ফর অল-এ তাঁরা এই জনসংখ্যার সমস্যাকে মেলাতে চেয়েছেন দারিদ্র, অসাম্য, শিক্ষা, প্রাকৃতিক সম্পদের অনুদ্বায়ী ব্যবহারের সঙ্গে। একে ওনারা একটা “বনাম”-এর মাধ্যমে বোঝাচ্ছেনঃ giant leap vs. too little too late scenarios. সেটা নিয়ে তুমি কী বলবে?

(এই গোটা আলোচনা জুড়ে “মান্দাস”-এর বইয়ের ঠেকে একটা মাছির পরিভ্রমণ লক্ষ্য করা যাচ্ছিলো। মাছি, টিকটিকি কিংবা আরশোলার অর্থনীতিতে অবদানের কথা মূলধারার অর্থনীতি ভুলে যায়। কারণ? শ্যুমাখার বলবেন “obsession with bigness”! মাছিটা কি কোনো “অন্য” রাস্তার খোঁজে এসেছিলো?)

এবার আসুন, উত্তর-প্রতর্ক-সহ গোটা আলোচনাটা শুনে ফেলা যাক!


“অর্থ-নী-নেতি” নিয়ে বাদ-বিবাদ (২৮/০৩/২০২৫) এখানে দেখুন⤡

অর্থ-নী-নেতি কিতাবটি অনলাইনে কিনতে হলে এখানে দেখুন ।

সরাসরি দোকান থেকে কিনতে হলে, চলে আসুন মান্দাসের ঠেকে। ঠিকানাঃ ১৮, সূর্য সেন স্ট্রিট, কোল- ৭০০০১২!

বিশেষ কৃতজ্ঞতাঃ সায়ন্তন মুখোপাধ্যায়, সুকল্প চট্টোপাধ্যায় আর অনির্বাণ।

Comments

Popular posts from this blog

None Kept One’s Words: Modiji’s Promises

Mr. Paramavaiṣṇava’s Trial: A Courtroom Drama

Defending the Victims: Challenging the ‘Capital’ Punishment Imposed on DHFL Stakeholders